এটিএম শামসুজ্জামানের পাশে কবরী  

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন জনপ্রিয় অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামানের খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে গেলেন বিশিষ্ট অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী।

শুক্রবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে তিনি তাকে দেখতে যান। বিষয়টি জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহসভাপতি শেখ মো. জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, সারাহ বেগম কবরী ও আমাদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানাসহ বেশ ক’জন নেতৃস্থানীয় নেতারা এটিএম শামসুজ্জামানকে দেখতে যান। কবরী এটিএম শামসুজ্জামানের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেন। এসময় তিনি তার চিকিৎসার সুবিধা ও অসুবিধার বিষয়ে খোঁজখবর নেন।

গত ১৫ জুন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ভর্তি হন অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান।

এর আগে, মলমূত্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত ২৬ এপ্রিল শুক্রবার রাতে অসুস্থ বোধ করেন এটিএম শামসুজ্জামান। ওই সময় শ্বাসকষ্টও শুরু হয় তার। এরপর সেদিন রাত ১১টায় পুরান ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বর্ষীয়ান অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামানকে।

পরে গত ২৭ এপ্রিল দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তার ফুসফুসে অস্ত্রোপচার করা হয়। ফুসফুসে সংক্রমণ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয় তার। এরপর ৩০ এপ্রিল তাকে প্রথম লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। পরে লাইফ সাপোর্ট খুললে আবারও অসুস্থবোধ করেন তিনি। পরে ৬ মে দ্বিতীয়বারের মত তাকে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়।

এদিকে, গত ১৩ মে এটিএম শামসুজ্জামানের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অভিনেতার চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এরই মধ্যে ১০ লাখ টাকার চেক হাসপাতালের তহবিলে জমা দেয়া হয়েছে।

এটিএম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। এটিএম শামসুজ্জামানের চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয় ১৯৬১ সালে পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ ছবির সহকারী পরিচালক হিসেবে। এরপর তিনি প্রথম কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘জলছবি’ সিনেমার জন্য। এ পর্যন্ত শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনি লিখেছেন এটিএম শামসুজ্জামান।

এছাড়া কৌতুক অভিনেতা হিসেবে ১৯৬৫ সালের দিকে চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন এটিএম শামসুজ্জামান। ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে দারুণ আলোচনায় আসেন তিনি।

১৯৮৭ সালে কাজী হায়াত পরিচালিত ‘দায়ী কে?’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান এটিএম শামসুজ্জামান। এরপর রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’তে অভিনয় করেন ও শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব-চরিত্রে অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান এই অভিনেতা।

ছবির পাশাপাশি এটিএম শামসুজ্জামান অভিনয় করেছেন অসংখ্য নাটকে। এটিএম শামসুজ্জামান অভিনয়ে মোট পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়াও শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক।

 

টাইমস/জেকে/জেডটি

Share this news on: